বুধবার পূজা উদযাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু মহাজোট ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ রাজা বিজয় সিংহ দূরধরিয়া শিব মন্দির, শিবলিঙ্গ বিগ্রহ ভাংচুর এবং প্রতিমা অপসারণের প্রতিবাদে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
নেতৃবৃন্দ তাঁদের লিখিত বক্তব্যে জানান বিগত ৩ ডিসেম্বর’১৭ তারিখে অবৈধ উচ্ছেদের নামে জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী শহীদ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের দক্ষিণ দিকে ৫০ গজ দূরে রাজা বিজয় সিংহ দূরধরিয়া শিব মন্দিরটি বুলডুজার দিয়ে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় মন্দিরসহ পুরোহিতের থাকার ঘর বিনা নোটিশে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৬২ সালে সিএস রেকর্ডে ৫২ শতাংশ জমি রাজা বিজয় সিংহের দূরধরিয়া নামে প্রচারিত হয়। এস এ রেকর্ডের সময়ে রাজা বিজয় সিংহের দূরধরিয়া নামে ওর্য়াকিং ভলিয়ুমে নাম অর্ন্তভুক্ত হয়। কিন্তু বি আর এস রেকর্ড ভুলবশত ৫২ শতাংশ জমি সড়ক ও জনপথের নামে লিপিবদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সড়ক ও জনপথ ময়মনসিংহ ১নং বিবাদী এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ ২নং বিবাদী করে বিজ্ঞ জেলা ময়মনসিংহ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যালে ১১৭৯/২০১৬ সন রাজা বিজয় সিংহের দূরধরিয়া শিব মন্দির পক্ষে পুরোহিত দ্বীজেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী বাদী হয়ে মোকদ্দমা দায়ের করেন যা চলমান অবস্থায় আছে এবং বিবাদী পক্ষগণ তা অবগত আছেন। বিনা নোটিশে মন্দির ভাঙ্গার নজির বিরল বলে মনে করেন নেতৃবৃন্দ। এতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে।
৪ ডিসেম্বর এই বিষয়ে আলোচনার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানের সাথে দেখা করলে তিনি মন্দির ভাঁঙ্গা ও প্রতিমা সরানোর দায় স্বীকার করেন এবং কোন ক্রমেই এখানে মন্দির পুন:স্থাপন করতে দিবেন না মর্মে সাফ জানিয়ে দেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের এহেন অনাকাঙ্খিত ও অশোভন আচরনে সনাতন ধর্মীয় সম্প্রদায় মর্মাহত ও ক্ষুদ্ধ এবং আতংকিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: খলিলুর রহমান সমস্যা সমাধানের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ প্রকাশ্যে দিবালোকে মন্দির বিগ্রহ ও পুরাহিতের বাসস্থান ভেঙ্গে দেয়ার নির্দেশ দাতা ও ভাঙ্গার নেতৃত্বদানকারী ও জড়িত থাকা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবী জানান। সাথে সাথে স্বস্থানে মন্দিরটি পুন:নির্মাণ বিগ্রহ পুন:স্থাপণসহ ক্ষয়ক্ষতি পূরণের দাবী জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এড, বিকাশ রায়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নৃপেশ চন্দ্র সরকার, পুজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি পিযুষ কান্তি সরকার, পুজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর সাহা, সুজিত বর্মন, অসিত রঞ্জন দত্ত বাবনসহ সনাতন ধর্মাবল্মীরা।