ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আত্মার, রক্তের ও ভ্রাতৃত্বের। এই সম্পর্ক কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়। কলকাতায় এই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ রবিবার কলকাতার রোটারি সদনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হানিফ বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের দেশ গঠনের।
সেই লক্ষ্যেই আমরা বাংলাদেশের মানুষ কাজ করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ক যেন আরো বৃদ্ধি পায়।’
দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাঁর যে আন্তরিকতা, বিশেষ করে শেখ হাসিনার প্রতি তাঁর যে মানসিকতা, আন্তরিকতা এটা আমাদের জাতিকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছে। আমরা চাই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে দুই দেশ এগিয়ে যাক।’
কয়েকদিন আগেই চাঁদে চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ নিয়ে ভারতের প্রশংসা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এটা এই উপমহাদেশের কাছে খুবই গৌরবের বিষয়। ভারতের বিজ্ঞানীরা তাদের দক্ষতা দেখিয়ে দিয়েছে। এখানে নরেন্দ্র মোদিরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। তিনি যে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কতটা সহায়তা ও উজ্জীবিত করেন সেটা দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষ করে ভারতে নেমেই বেঙ্গালুরুতে ইসরোর সদর দপ্তরে গিয়েছেন, সেটাও পত্রিকায় পড়লাম। ’ তার অভিমত ‘এরকম একজন দক্ষ আন্তরিক প্রধানমন্ত্রী থাকলে সেই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অবশ্যম্ভাবী। গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারত একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ যত বেশি শক্তিশালী হবে, বড় হবে, পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে তাদের সাথে আমরাও এগিয়ে যেতে পারবো।
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘের সভাপতি শিশির বাজোরিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী আবু নাসের
ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডসিপ এ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক সুমন হালদার প্রমুখ।
আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সোনার বাংলা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সেটা গড়তে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতেরও সহায়তা দরকার।’
স্বপন মজুমদার বলেন, ‘ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একসময় এক সঙ্গে ছিল।
পরে সেটি ভাগ হয়। এরও পরে ভাষার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। আর সেই ক্ষেত্রে সহায়তা করেছিলেন আমাদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় নঈম নিজাম বলেন, প্রথমে শিক্ষাজীবন, পরে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি শুরু হয়েছিল এই কলকাতা থেকে। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৬ সালে যে দাঙ্গা হয়েছিল, সেখানেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যই ছিল একটি উন্নত দেশ গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাবার আদর্শ সামনে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
শিশির বাজোরিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি উন্নত দেশ হোক। সে লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগোচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে বন্ধুত্ব আছে, তা অটুট আছে।
সাংবাদিকদের সাক্ষাতকারে সুমন হালদার বলেন
ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক রক্তের এ সম্পর্ক কোনদিন ছিন্ন হবার নয় ,১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা শ্রদ্ধ্যার সহিত স্বরন করি প্রায় ১৭ শত ভারতীয় সেনার বলিদানে আজ আমাদের বাংলাদেশ
এ ঋণ শোধ হবার নয় ।
আবু নাসের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে চোখে দেখিনি। কিন্তু তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশে ঈদ ও পূজা এক সঙ্গে পালন করি।