অধস্তন আদালতের বিচারকের নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ ও অপসারণ সংক্রান্ত চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেটে অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাতেই রাখা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিক বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালায় এ সংক্রান্ত সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গেজেটের ৩ (জ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ’ অর্থ রাষ্ট্রপতি বা তৎকর্তৃক সংবিধানের ৫৫ (৬) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রণীত Rules of Business-এর আওতায় সার্ভিস প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগ।
সংবিধানের এই ৫৫ (৬) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি সরকারি কার্যাবলি বণ্টন ও পরিচালনার জন্য বিধিগুলো প্রণয়ন করবেন।’
তবে গেজেটের ৩(ছ) অনুচ্ছেদে দেওয়া সংজ্ঞামতে ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’বলতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও সার্ভিস সদস্যদের প্রশাসনিক বিষয়ে স্থানীয় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে বোঝানো হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি গেজেট আকারে প্রকাশ করতে সরকারকে বারবার সময় দেন আপিল বিভাগ। কিন্তু কয়েক দফা সময় নিয়েও গেজেট প্রকাশে ব্যর্থ হয় সরকার।
এমনকি আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ।
বিষয়টি নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে আইনমন্ত্রীর আলোচনায় বসার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞাসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা শেষে আইনমন্ত্রী গেজেট প্রকাশ দ্রুত হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। তবে আইনমন্ত্রী চলতি মাসের ৩ তারিখের মধ্যে গেজেট প্রকাশের কথা বললেও তা আজ (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশ পায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। সেই নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ প্রনয়ণ করে আইন মন্ত্রণালয়।