অস্থির চালের বাজারে আমন ধান এখন নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে কৃষকদের জন্য। এ বছর যারা ‘আগাম’ জাতের ধান চাষ করেছেন তারা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। পঞ্চগড়ে আগাম জাতের ধানের ফলন আমন মৌসুমকেও ছাড়িয়ে গেছে। আর চালের বাজারে এখন অস্থিরতা চলায় ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা। আগাম জাতের ধান মূলত নির্দিষ্ট মৌসুমের আগেই ফলন দেয়।
আশ্বিন–কার্তিক মাসে প্রান্তিক কৃষক ও কৃষি–শ্রমিকরা অনেকটাই বেকার সময় কাটান। আগাম জাত হওয়ায় জীবিকা নির্বাহের উৎস বেড়েছে তাদেরও। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমের আরো দেড় থেকে দুই মাস পরে কৃষকের ঘরে উঠবে আমন ধান। তবে আগাম জাতের ধান দ্রুত সময়ে ভাল ফলন দিয়েছে। ফলে আমন ধানের আগেই আগাম ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পঞ্চগড়ের কৃষকরা।চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ৯৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের পাশাপাশি ১২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগাম জাতের এই ধানের উৎপদন হবে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ২ মেট্রিক টন। এরই মধ্যে কৃষকরা ধান কেটে মাড়াই করতে শুরু করে দিয়েছেন। আর আগেভাগেই ওই সব জমিতে তারা এখন আলু ও ভুট্টা লাগানোর চিন্তা করছেন।সদর উপজেলার পঞ্চগড় ইউনিয়নের জগদল এলাকার কৃষক মজাহারুল হক প্রধান বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ একর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান রোপণ করেছিলাম। আশা করছি বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ মণ ধান তুলতে পারব। বিএডিসির সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা ধান কাটার পরই ফাঁকা জমিতে আলু চাষ করার পরামর্শ দিয়েছেন।’এ বিষয়ে জেল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ–পরিচালক মো. সামছুল হক বলেন, ‘পঞ্চগড় এলাকা মূলত রোপা আমন চাষ বেশ জনপ্রিয়। তবে চলতি মৌসুমে বিভিন্ন উপজেলায় রোপা আমনের পাশাপাশি ১২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘এতে কৃষকরা বেশ ভাল ফলন পেয়েছেন। অনেকেই ধান চাষ শেষে কেটে নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এই জাতের ধান আবাদ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন। আশা করছি আগামী মৌসুমে কৃষকরা এই জাতের ধান চাষে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে