চন্দন কুমার ঘোষকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে আটক হাসিবুর রহমান শুভ। চন্দনের কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নিতেই তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ছিনতাইয়ের সঙ্গে তারা চারজন জড়িত বলে জানিয়েছে শুভ।
আটক শুভ শহরের বেজপাড়া গোলগুল্লার মোড়ের আব্দুল হালিমের ছেলে। রবিবার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আকরাম হোসেন আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে শুভ জানিয়েছে, তারা চার বন্ধুই মাদকাসক্ত। নেশার টাকা যোগাড় করতে তারা ছিনতাই, চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধ অপকর্ম করে বেড়াত। এদের একজনের বাড়ি মুড়লী আর অন্য তিনজন বেজপাড়া এলাকার। ১৯ জুন সন্ধ্যায় তারা চারজন একসঙ্গে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। প্রথমেই তারা মণিহার এলাকায় যায়। সেখান থেকে রাতের খাবার খেয়ে নতুন বাজারের দিকে যায়। সেখানে ছিনতাই করার মত কোনো লোককে না পেয়ে রাত ১২টার দিকে চলে আসে চৌরাস্তায়। সেখানে পুলিশের গাড়ি দেখে একটি গলির মধ্যে পালায়।
এরপর আদ-দ্বীন হাসপাতালের দিকে যায়। তখন আনুমানিক রাত ৪টা। এ সময় শুভ বাড়িতে যেতে চায় কিন্তু অন্যরা তাকে যেতে বাধা দেয়। এরই মধ্যে একজন যাত্রী নিয়ে একটি রিক্সা আসে। দুইজন ওই রিক্সায় উঠে যাত্রীকে চেপে ধরে। শুভ ও অন্য একজন তার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। লোকটি কোনোভাবে ব্যাগটি হাত ছাড়া করতে না চাইলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এর পর লোকটি ব্যাগ ছেড়ে দেয়। আর এর আগেই রিক্সাচালক ভয়ে দৌড়ে অন্যত্র চলে যায়। এর পর ব্যাগ নিয়ে চারজনেই বেজপাড়া ফুলবাগানে চলে যায়। পরে ব্যাগ খুলে একটি মোবাইল, একটি চার্জার ও কয়েকটি কাপড় পায় তারা। শুধু মোবাইল ও চার্জার নিয়ে ব্যাগটি ফেলে দেয়া হয়। এরপর বাড়িতে গিয়ে শুভ সকল ঘটনা তার মাকে বলে। পরে সকালে লোকমুখে জানতে পারে লোকটি মারা গেছে।
২০ জুন ভোরে যশোর শহরের রেল রোড আদ-দ্বীন হাসপাতালের কাছে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিমান বাহিনীর সিভিল অডিটর ও যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকা ভবতোষ কুমার ঘোষের ছেলে চন্দন কুমার ঘোষ।
এ ঘটনায় ২০ জুন নিহতের পিতা ভবতোষ কুমার ঘোষ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অরুণ কুমার দাস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হাসিবুর রহমান শুভকে আটক করেন। রবিবার শুভকে আদালতে সোপর্দ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুভ আদালতে চন্দন কুমারকে হত্যার কথা স্বীকার ও অন্যদের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দিয়েছে।