রাজশাহীর চারঘাটে শিশু দেব হত্যার প্রায় দুই বছর পর আসল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। মামলার আসামী তার জবানবন্দীতে অবাক করা সব তথ্য স্বীকার করেছেন।
২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর চারঘাটের নন্দনগাছীর বরকতপুর পোড়াভিটা গ্রামে থেকে একটি গলিত শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শম্ভু সরকার নামে একজন নিজের ছেলের লাশ দাবি করে চারঘাট মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
গলিত শিশুর লাশের ডিএনএ প্রতিবেদন, দুই বছর ধরে চলা তদন্ত, সব মিলিয়ে প্রমাণ হয় গলিত শিশুর লাশটিই শম্ভু সরকারের ৫ বছরের ছেলে দেব। বেরিয়ে আসে আরও আশ্চর্য সব তথ্য। থানা এজাহারভূক্ত আসামী ১৮ জুন সোমবার হত্যা মামলার আসামী অনিলকে আটক করে থানা পুলিশ। অনিল তার জবানবন্দী স্বীকার উক্তিতে হত্যার বিষয়টা স্বীকারসহ অবাক করা সব তথ্য তুলে ধরেন। অনিলের ৪র্থ স্ত্রী আরতি গলিত লাশ দেবের মা। আরতির আগের স্বামী শম্ভু সরকারের পক্ষের ছেলে দেব। শম্ভুর সাথে আরতির ছাড়াছাড়ি হলে দেব তার নানীর কাছে থাকতো। শম্ভু সরকারকে রেখে আরতি অনিলকে বিয়ে করলেও, শম্ভু আরতিকে ফিরে চাইতো।
থানা সূত্রে জানা যায়, অনিল তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, সে আর আরতি মিলে শম্ভুকে ফাঁসানোর জন্য বুদ্ধি বের করেন। যেন শম্ভু জেলে থাকে, আর তারা দুজন শান্তিতে থাকতে পারে। দুজন মিলে শম্ভুর পক্ষের ছেলে দেবকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপরে দেবকে দুধের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে মেরে ফেলে। দেবকে মারার পরে তার লাশ পাশের এক গোরস্থানে পাটি ও লতা পাতা দিয়ে চাঁপা দিয়ে আসে। ঘটনার কিছুদিন পরেই একজন গোরস্থান পরিস্কার করতে গিয়ে গলিত লাশ দেখে পুলিশকে জানালে, চারঘাট মডেল থানা পুলিশ গিয়ে লাশটা উদ্বার করে। আসামী অনিলের স্বীকারোক্তি এবং সবরকম তদন্ত শেষে রবিবার (২৪ জুন) সকালে নিহত দেবের পাষণ্ড মা আরতীকেও আটক করা হয়। উল্লেখ্য একটা শিশুর কঙ্কালের মত গলিত লাশ উদ্ধার হবার পর থেকেই সাধারন মানুষের কাছে সেটা রহস্যে পরিণত হয়।
এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ নজরুল ইসলাম এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ২০১৬ সালের হত্যা মামলার এজাহার ভূক্ত আসামী অনিলকে ১৮ জুন সোমবার দিবাগত রাতে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীর জবানবন্দী ও তদন্ত শেষে আরতীকেও আটক করা হয়েছে। সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে জানান।