ঘরের মাঠ ’পুষ্পপুরে’ মুমিনুল হক সৌরভের ব্যাটই কেবল সৌরভ ছড়ালো। চট্টলার সঙ্গীত সম্রাট শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণবের গানের সুর যেন তারই ব্যাটে ছিল। যতক্ষণ তিনি ক্রিজে ছিলেন ফ্লাট উইকেট মনে হয়েছে। অন্যরা ব্যাটিং করার সময় যেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট বোলিং স্বর্গ। তাই মুমিনুল হকের দারুণ সেঞ্চুরির পরও দিন শেষে কষ্টে-শিষ্টে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ৩১৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। তার কৃতিত্ব শেষটায় দারুণ ব্যাট করা নাঈম-তাইজুলের। বাংলাদেশের স্বস্তি বলতে প্রথম ইনিংসটা দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখা। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুরু হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে মুমিনুল হকের ব্যাটে প্রথম ইনিংসে বড় রানের দিকে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মুমিনুলসহ সেরা চার ব্যাটসম্যানকে টপাটপ তুলে নেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। এরপর মিরাজ আউট হলে দ্রুত অলআউটের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। সেখানে থেকে নবম উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তাইজুল-নাঈম। শেষ করেন প্রথন দিন। তাদের দৃড়তায় প্রথম দিন শেষে তিনশ’ পেরিয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে সৌম্যকে হারায়। এরপর মুমিনুল-ইমরুল শত রানের জুটি গড়েন। ইমরুল ফিরে যান ৪৪ করে। তবে ঢাকা টেস্টের পর চট্টগ্রাম টেস্টেও সেঞ্চুরি পান মুমিনুল। সেঞ্চুরির পরেই ১২০ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন তিনি। তার আউটের পর ক্রিজে এসে একে একে ফেরেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। তারা যথাক্রমে ৪ ও ৩ রান করেন। তবে দলকে ভরসা দিতে ক্রিজে ছিলেন সাকিব। তিনিও গ্যাব্রিয়েলের শিকার হয়ে ফেরেন ৩৪ রানে। বাংলাদেশ ১৩ রানের মধ্যে হারায় ৪ উইকেট। প্রথম ইনিংসের লাগামও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে দিয়ে দেয় বাংলাদেশ। তবে ক্রিজে এসে মেহেদি মিরাজ বেশ দ্রুত রান তুলতে থাকেন। সম্ভাবনাকে বড় করতে পারেননি তিনিও। ফিরে যান নিজের ২২ রানে দলের ২৫৯ রানের মাথায়। এরপর শেষ বিকেলে উইন্ডিজের ব্যাট নামার অপেক্ষা ছিল। তবে শেষটায় অভিষেক হওয়া নাঈম হাসান ব্যাট হাতে দারুণ শুরু করেন। সঙ্গ দেন তাইজুলও। দিন শেষে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ৩২ এবং ডানহাতি স্পিনার নাঈম ২৪ রানে অপরাজিত আছেন। দ্বিতীয় দিন সকালে উইন্ডিজ বোলারদের সামলাতে আবার ব্যাটে নামবেন তারা। এর আগে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা মিঠুন ফেরেন ২০ রান করে। সৌম্য দলের হয়ে কোন রান করতে পারেনি। তবে পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেন মুমিনুল হক। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। এছাড়া চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ষষ্ঠ শতক পেলেন মুমিনুল হক। এই স্টেডিয়ামে এক হাজার রান করারও পথে ছিলেন তিনি। কিন্তু তার আগে আউট হয়ে ফিরলেন। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে সে সুযোগ আছে তার সামনে। উইন্ডিজের হয়ে গ্যাব্রিয়েল ৬৯ রানে ৪ উইকেট নেন। এর আগে বাংলাদেশ দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ম্যাচের আগের দিন খেলা নিয়ে সংশয়ের কথা জানালেও দলে ফিরেছেন টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গে অভিষেক হয়েছে ডান হাতি স্পিনার নাঈম হাসানের। বাংলাদেশ চার স্পিনার এবং এক পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে।ঢাকা টেস্টের দলে থাকা আরিফুল হক এবং খালেদ আহমেদ নেই চট্টগ্রাম টেস্টের দলে। তাদের জায়গায় দলে এসেছেন সাকিব এবং নাঈম। এছাড়া একমাত্র পেসার হিসেবে দলে আছেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাদমান ইসলামের অভিষেক নিয়ে বেশ কথা উঠলেও শেষ পর্যন্ত দলে জায়গা মেলেনি তার।