২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৬:০৪
ব্রেকিং নিউজঃ

সনাতন ধর্মে নারী

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, ডিসেম্বর ৮, ২০১৮,
  • 987 সংবাদটি পঠিক হয়েছে
সনাতন ধর্ম নারীকে দিয়েছে যথাযোগ্য মর্যাদা। শাস্ত্রজ্ঞানের অভাবে, প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কারে অভ্যস্ত থাকায়, উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারের কারণে আমরা সনাতন ধর্মে নারীর অবস্থান সম্পর্কে অবগত নই। আসুন জেনে নেই সনাতন ধর্মে নারীর অবস্থান।১. নারী হলো শিশুর প্রথম জ্ঞানদাতা – অথর্ববেদ ৭/৪৭/২।

২. পিতার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে – ঋগ্বেদ ৩/৩১/১।

৩. একজন নারীর কখনো যেন কোন সতীন না থাকে – অথর্ববেদ ৩/১৮/২৪।

৪. পতি ও পত্নী মৃত্যুপর্যন্ত একসাথে থাকবেন। তারা অন্যকোন জীবনসঙ্গী গ্রহণ করবেন না বা ব্যাভিচার করবেন না। এই হলো নারী-পুরুষের ধর্ম – মনুসংহিতা ৯/১০১।

৫. স্বামীর উচিত শুধু একমাত্র স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত থাকা। দ্বিতীয় কোন নারীর প্রতি অনুরাগ থাকা উচিত নয় – অথর্ববেদ ৭/৩৮/৪।

৬. নারী শিক্ষাগ্রহণ শেষে পতিগৃহে যাবে – অথর্ববেদ ১১/৫/১৮।

৭. হে নারী! মৃত পতির শোকে অচল হয়ে লাভ কি? বাস্তব জীবনে ফিরে এসো। পুনরায় পতি গ্রহণ করো- অথর্ববেদ ১৮/৩/২ এবং ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮।

সহমরণে স্ত্রী স্বর্গে যাবে এরকম বিশ্বাসে সতিদাহ প্রথা একটি কুসংস্কার হিসেবে প্রচলন লাভ করেছিল তৎকালীন সনাতন সমাজে। যাই হোক, এই কুসংস্কার সনাতন সমাজ থেকে দূর করা হয়েছে। সনাতন ধর্ম স্বয়ং বিধবা বিবাহের নির্দেশ দিয়েছে।

৮. নারীর স্বামী যদি মারা যায়, যদি গোপনে সন্ন্যাস গ্রহণ করে, যদি নিখোঁজ হয়, যদি সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হয়, যদি অধার্মিক ও অত্যাচারী হয় তবে স্ত্রী এই স্বামী ছেড়ে পুনরায় বিবাহ করতে পারে – পরাশরসংহিতা ৪.৩০।

৯. নববিবাহিতা বধূ, কন্যা এবং গর্ভবতী মহিলাদের অতিথি ভোজনের পূর্বেই ভোজন প্রদান করতে হবে – মনুসংহিতা ৩/১১৪।

১০. যারা নারীদের ধর্ষণ করে বা উত্ত্যক্ত করে বা তাদের ব্যাভিচারে প্ররোচিত করে তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে তা অন্যদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে এবং কেউ তা করতে আর সাহস না পায় – মনুসংহিতা ৮/৩৫২।

১১. নারী অপহরণকারীদের মৃত্যুদন্ড হবে – মনুসংহিতা ৮/৩২৩।

১২. কন্যা পুত্রের সমান। তার উপস্থিতিতে কেউ তার অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না – মনুসংহিতা ৯/১৩০।

১৩. মাতৃরূপে, কন্যারূপে, স্ত্রীরূপে, ভগ্নীরূপে কিংবা ধর্মকর্মে অংশীদাররূপে নারীই সকল কল্যাণের মূল উৎস – মনুসংহিতা ৯/২৮।

১৪. স্ত্রীলোকেরা নতুন প্রজন্ম বা উত্তরসূরির জন্ম দেয় ও পালন করে। তারা সৌভাগ্য ও আশীর্বাদ বয়ে আনে। তারাই গৃহের শ্রী – মনুসংহিতা ৯/২৬।

১৫. সনাতন ধর্ম নারীর সম্ভ্রম রক্ষার শিক্ষা দেয়। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সম্ভ্রম রক্ষা করেছিলেন।

১৬. সনাতন ধর্মে নারীকে বলা হয় সহধর্মিণী। স্বামী স্ত্রী একসাথে মন্দিরে যাবেন, ধর্মকর্ম করবেন।

১৭. নারীকে নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে দাও – মনুসংহিতা ২/১৩৮।

১৮. সনাতন ধর্মে বিবাহ ষোড়শ সংস্কারের অন্যতম পবিত্র কার্য। এখানে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সনাতন ধর্মে বিয়ে হলো আত্মার সাথে আত্মার মিলন।

১৯. সনাতন ধর্ম নারী পুরুষ উভয়কেই রুচিশীল ও মার্জিত পোশাক পরিধানের নির্দেশ দিয়েছে।

হে পুরুষ ও নারী, তোমাদের পোশাক ও দৃষ্টি সবসময় হোক ভদ্র ও অবনত। তোমাদের চলন হোক সংযত, দেহ হোক পোশাকে আবৃত, নগ্নতা হোক পরিত্যাগ – ঋগ্বেদ ৮/৩৩/১৯।

২০. সনাতন ধর্ম নারী পুরুষ সবাইকে সমান করে দেখে। সবাইকে জেন্ডার বা লিঙ্গ পরিচয়ের ঊর্ধ্বে থেকে মানুষ পরিচয়ে ভাবতে শেখায়।

মানবের মধ্যে কেউ বড় নয়, কেউ ছোট নয়। জন্ম থেকেই তারা শ্রেষ্ঠ – ঋগ্বেদ ৫/৫৯/৬।

২১. যদি কেউ মা, স্ত্রী বা কন্যার নামে মিথ্যে দোষারোপ করে তাকে শাস্তি দিতে হবে – মনুসংহিতা ৮/২৭৫।

২২. সনাতন ধর্ম নারীর ক্ষমতায়নে ও নারী নেতৃত্বে বিশ্বাসী। মহাভারতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের দেখা যায়। নারীদের রথ/যানবাহন চালানোর অধিকারও আছে।

২৩. যারা নারী, শিশু ও গুণবান পন্ডিতদের হত্যা করে তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে – মনুসংহিতা ৯/২৩২।

২৪. ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া যে মা, বাবা, স্ত্রী বা সন্তান ত্যাগ করে তাকে কঠিন দন্ড দিতে হবে – মনুসংহিতা ৮/৩৮৯।

২৫. সনাতন ধর্ম ডিভোর্সের মতো নিষ্ঠুর পন্থা সমর্থন করে না। এজন্য সনাতন বিবাহ আইনে ডিভোর্স নেই। স্বামী স্ত্রীর মতের অমিল হলে উনারা আলাদা থাকবেন এবং আজীবন স্বামীকে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »