১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সন্ধ্যা ৬:৩৬
ব্রেকিং নিউজঃ

ভারতে খুনের রাজনীতি সৃষ্টি করে বামপন্থিরা ।

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শুক্রবার, জানুয়ারি ৪, ২০১৯,
  • 412 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

সৌভিক রাতুল বসু

আজ থেকে ঠিক ৪৮ বছর আগে – দিনটা ছিল ৩০শে ডিসেম্বর ১৯৭০, কলকাতারই কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদরদী এক উপাচার্যের কাজের মেয়াদের শেষ দিন। অফিসের শেষ ফাইলে সই করে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় উপাচার্য বাড়ি ফিরছেন প্রতিদিনের মত হেঁটে লাইব্রেরির পাশে, পুকুরপাড় দিয়ে, একটু আগেই রেজিস্ট্রারের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন ।
সেই ফেরা অবশ্য আর হয়ে ওঠেনি । আততায়ীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, পুকুরপাড়েই তাঁকে হত্যা করল।

তার আগেই অবশ্য রাজনৈতিক ফতোয়া দেওয়া হয়েছে ’৭০-এর দশকের শুরুতেই — ‘ বুর্জোয়া শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হোক, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল হোক ‘ । স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক সন্ত্রস্ত, তবে উনি কিন্ত অকুতোভয় ও নারাজ। তাঁর বিবেচনায় পরীক্ষা স্বেচ্ছায় না দেওয়ার স্বাধীনতা সব ছাত্রের আছে, তবে দায়িত্ববান শিক্ষক হিসাবে ইচ্ছুক ছাত্রদের পরীক্ষা নিতে তিনি বাধ্য। ১লা অগস্ট কর্তৃপক্ষ তাঁকে স্বল্পকালীন মেয়াদে উপাচার্য নিযুক্ত করে তাঁর কাঁধেই ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা নেওয়ার ভার ন্যস্ত করল।

অস্থায়ী উপাচার্য কোনও ভাতা নিতেন না, গাড়ি ব্যবহার করতেন না, এমনকী উপাচার্যের চেয়ারেও বসতেন না। বসতেন পাশের একটি চেয়ারে। প্রাণনাশের হুমকি পাওয়া সত্ত্বেও উপাচার্য নির্বিঘ্নে পরীক্ষা নিলেন, যথাসময়ে ফলও ঘোষিত হল। ইতিমধ্যে পুজোর ছুটি পড়ে গিয়েছে, ছাত্ররা পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেট নেবে কী ভাবে? সমস্যার সমাধান করলেন উপাচার্য নিজে। ঘোষণা করা হল, ছুটিতে ছাত্ররা উপাচার্যের বাড়িতে এসে পরীক্ষা পাশের প্রভিশনাল সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে পারে। সেই ছুটিতে সকাল-বিকেল তাঁর বাড়িতে ছাত্রদের ভিড়, উপাচার্য নিজের হাতে বিলি করছেন সার্টিফিকেট।
উপাচার্য ভদ্রলোকটির নাম অধ্যাপক গোপালচন্দ্র সেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম যাদবপুর আর আততায়ীরা অতি বাম ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ওনারই নকশালপন্থী ছাত্ররা ।

জনশ্রুতি শ্রেণীশত্রু গোপাল সেনকে পিছন থেকে ছুরি মেরেছিলেন যে কমরেড, তিনি নাকি কলকাতার এক বিখ্যাত ডাক্তারের ছেলে ; ধরা পড়েনি……. তাকে
রাতারাতি পুঁজিবাদের পীঠস্থান আমেরিকাতে পাঠিয়ে দেন ডাক্তার বাবা……

এদেশে রাজনৈতিক খুনোখুনি আনে বাম আর অতিবামেরাই । বিরোধী মত হলেই খুন করতে হবে এই ধারনাটি সোভিয়েত থেকে আমদানি করে এদেশে সফল প্রয়োগ শুরু করে কমিউনিস্টরা কেরালা থেকেই সেই ১৯৫৭ সালে — তারপর শ্রেনীশত্রু ঘোষনা করে একের পর এক নিরীহ মানুষ হত্যা আরম্ভ করে নকশাল আর সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গে ১৯৬৯-৭১ এর সময় । এরপর ১৯৭৭ সালে এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বামফ্রন্টের দীর্ঘ ৩৪ বছরের শাসনকালে প্রায় ৫৫০০০ মানুষ খুন হয়েছিল রাজনৈতিক কারনে । এর মধ্যে যেমন মরিচঝাঁপী আছে তেমনি আছে প্রকাশ্য দিবালোকে বিজন সেতুতে ১৭জন সন্ন্যাসীকে পুড়িয়ে মারা আবার আছে সরকারের বিরোধীতার কারনে বানতলাতে তিনজন ( ইউনিসেফ এবং রাজ্য স্বাস্থ্য পরিসেবা ) মহিলা অফিসারকে ধর্ষন ও একজনকে হত্যা । এত নৃশংসতা ছিল এর মধ্যে যে একজন মহিলার গোপনাঙ্গে টর্চ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল ।

কেরালাতে রাজনৈতিক হানাহানিতে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০০০ এর ওপর । অজস্র আরএসএস এবং কংগ্রেস নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে বামেরা এবং আজো করে চলেছে ।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »