২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ভোর ৫:২৬
ব্রেকিং নিউজঃ

চাঁদের ‘আঁধার দুনিয়া’য় পা ফেলল চিনের যান

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, জানুয়ারি ৫, ২০১৯,
  • 357 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

ওই চাঁদ-মুখ কেউ কোনও দিন দেখিনি। পৃথিবীর চারপাশে সে এমন ভাবেই পাক খায়, চাঁদের ওই চেহারা বরাবর লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে গিয়েছে। কখনও পৃথিবীর সামনে আসেনি। উপগ্রহের সেই ‘অন্ধকার দুনিয়া’তেই পা রাখল চিনা চন্দ্রযান ‘চাং-ই ৪’। বৃহস্পতিবার নিজেদের সাফল্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে।

গত ৮ ডিসেম্বর শিচুয়ান প্রদেশের ‘শিচ্যাং স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার’ থেকে মহাকাশে পাড়ি দেয় ‘চাং-ই ৪’। দেড় মিটার লম্বা, ১ মিটার চওড়া, ছ’চাকার যানটি নাম রাখা হয়েছে চিনা লোকগাঁথা থেকে। চাঁদের দেবীর নাম ‘চাং-ই’। উৎক্ষেপণের চার দিন পরে চাঁদের কক্ষপথে ঢোকে চন্দ্রযানটি। চিনের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) জানিয়েছে, ‘চাং-ই ৪’ বৃহস্পতিবার বেজিংয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২৬ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরু এইকেন বেসিনে নেমেছে। এটি উপগ্রহের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন গহ্বর। ‘চাং-ই’-র নকশা বানিয়েছিলেন যিনি, সেই বিজ্ঞানী সান জ়েঝৌয়ের কথায়, ‘‘পাখির চোখে তির মেরেছে আমাদের যান। পূর্বনির্ধারিত পথেই মসৃণ ভাবে সে চাঁদের মাটিতে পা ফেলেছে।’’ ইতিমধ্যেই ‘চাং-ই ৪’ উপগ্রহের ছবিও তুলে পাঠিয়েছে। চিনের দাবি, এত কাছ থেকে, এত স্পষ্ট ছবি অন্য কোনও দেশের মহাকাশযান পাঠায়নি।  

পৃথিবীর চারপাশে এমন ভাবেই পাক খায় চাঁদ, যে তার একটি প্রান্ত কখনওই পৃথিবীর মুখোমুখি হয় না। চাঁদের এই অংশটিকে অনেকে ‘ডার্ক সাইড’ বা ‘অন্ধকার দুনিয়া’ বলে। তবে ‘অদেখা’ অর্থে অন্ধকার। চাঁদের ওই অংশ কিন্তু একেবারেই অন্ধকার নয়। বাকি অংশের মতো এখানেও সূর্যের আলো পড়ে। এখানেই পা রেখেছে ‘চাং-ই ৪’। চাঁদের এই অংশটি যেহেতু পৃথিবীর উল্টো দিকে মুখ করে, তাই এখানে বেতার তরঙ্গ পৌঁছনো সম্ভব নয়। অভিযানের শুরুতে তাই চিন্তায় পড়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কারণ ‘চাং-ই ৪’ তা হলে সরাসরি পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে না। সমস্যার সমাধানে এ বছরের গোড়ায় একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় চিন। এটি চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ মারফতই পৃথিবীতে ছবি-তথ্য পাঠাবে ‘চাং-ই ৪’। 

চাঁদের এ রকম একটা অংশ বেছে নেওয়ার কারণ কী? সিএনএসএ-এর ‘লুনার এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড স্পেস প্রোগ্রাম সেন্টার’-এর ডেপুটি ডিরেক্টর তংজি লিউ বলেন, ‘‘চাঁদের ওই অংশ যেহেতু পৃথিবীর উল্টো দিকে, তাই পৃথিবীর তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের বাইরে থাকে জায়গাটি। কিছু সমস্যা যেমন রয়েছে, তেমনই মহাকাশ গবেষণার জন্য আদর্শ।’’ জলের সন্ধান ছাড়াও চাঁদের মাটিতে আর কী কী রয়েছে, তার খোঁজ করবে ‘চাং-ই ৪’। চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাতে পারে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে দেখবে সে। সেই সঙ্গে স্বল্প দৈর্ঘ্যের তরঙ্গ নিয়েও গবেষণা করবে চিনা চন্দ্রযান। 

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত চিনা বিজ্ঞানী উ উইরেনের কথায়, ‘‘মহাকাশ গবেষণায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে তৈরি চিন। ‘চাং-ই ৪’ চিনের সেই প্রথম মাইলফলক।’’ 

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »