নির্বাচনের আগেরদিন গত ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিমা রানী তুলসি তলায় ধূপবাতি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পান একটি সাদা কাগজের চিরকুট। তাতে লেখা ছিল, “আপনার শ্বশুর স্বাধন চন্দ্র সুত্রধর ছিলেন আমাদের লোক। তাই আমাদের কথায় চলতে হবে। যদি ভালো চান তবে আগামীকাল (৩০ডিসেম্বর) পরিবারের কেউই ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। গেলে পরিবারের সকলের ক্ষতি হবে। অসিম কুমার উকিল (ওই এলাকার নবনির্বাচিত সাংসদ, ৩০ শে ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন) আপনাদের বাঁচাতে পারবেন না।” ওই চিরকুট নিয়ে প্রতিমা এলাকার সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুস সেলিমের কাছে যান এবং তাকে চিরকুটটি দেখিয়ে ঘটনাটি অবহিত করেন। পরে বাড়িতে ফিরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বসতঘরের পাশে থাকা বাথরুমে যাওয়ার পথে ওঁৎপেতে থাকা অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা দাহ্য তরল মিশ্রিত কাপড় দিয়ে প্রতিমা রাণীর চোখে-মুখে জাপটে ধরে পালিয়ে যায়। এ সময় তার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি চিকিৎসাধীন থাকলেও এখনো দুই চোখে কিছুই দেখতে পারছেন না। এ ঘটনায় দুই যুবককে আটক করলেও পরে স্থানীয়দের জিম্মায় ছেড়ে দেয় পুলিশ। স্থানীয় মাতব্বররা এ ঘটনার বিচার করার আশ্বাস দিয়ে ঘটনাটি জানাজানি করার কথা বারণ করে। তাই সংসদ নির্বাচনের আগেরদিন রাতে (২৯ ডিসেম্বর) এ ঘটনা ঘটলেও তা জানাজানি হয়নি। প্রতিমা রাণী নেত্রকোনা কেন্দুয়া পৌর এলাকার আইথর গ্রামের নারায়ণ সূত্রধরের স্ত্রী। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি জেনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম! হামলার শিকার এই মহিলা একজন হিন্দু, যিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন তিনিও হিন্দু, কাজেই প্রতিমা রানী এবং তাঁর পরিবার যে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন এতে তো সন্দেহের কোন কারন নাই??? কাজেই তাদের ভোট প্রদানে বিরত রাখার উদ্দেশে কোন অপশক্তি এই কান্ড ঘটিয়েছে তা কি বলার অপেক্ষা রাখে??? কিন্তু এই আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও কেন দুইজনকে আটক করে স্থানীয়দের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হলো??? অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সেইসাথে প্রতিমা রানীর উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি।।