৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সন্ধ্যা ৬:৫৪

অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় বিল পাস

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ বুধবার, জানুয়ারি ৯, ২০১৯,
  • 347 সংবাদটি পঠিক হয়েছে


বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘু অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে গতকাল মঙ্গলবার লোকসভায় নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন এনে বিল পাস করা হয়েছে। তবে এই বিলে মুসলিমদেরও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।বিলে বলা হয়েছে, ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি, শিখ ও খ্রিষ্টান উদ্বাস্তুরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ওই অমুসলিম উদ্বাস্তুদের এই আইনের আওতায় আবেদন করতে হবে।গতকাল মঙ্গলবার ভারতের সংসদ লোকসভায় এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।বিল পেশ করে তিনি বলেন, বিলটি সাধারণ মানুষের জন্য হবে সুরক্ষাকবচ। বিলটি শুধু আসামের জন্য প্রযোজ্য নয়, ভারতের সব কটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, নির্যাতনের শিকার মানুষের বোঝা ভারত বহন করবে। ভারত ছাড়া ওদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। গুজরাট, রাজস্থান, দিল্লির মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য রাজ্যের উদ্বাস্তুদের স্বস্তি দেবে এই বিল।বিলে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উদ্বাস্তুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই বিল পাসের আগে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস ও তৃণমূলের সাংসদেরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভেদাভেদ করছে সরকার। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, বিলটি ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া উচিত ছিল। বিলে ছয়টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার হলে সবাইকে আশ্রয় দেওয়া উচিত ভারতের।এই বিল পাসের ফলে আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়া পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পাবেন।তবে এই নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাত্র সংগঠনগুলো ‘বনধ’ ডেকেছিল। এতে শামিল হয়েছে ওই সব রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। ওই দিন আসামের বিভিন্ন জায়গায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন ছাত্ররা। তাঁরা প্রতিবাদ মিছিল, সমাবেশ করেছেন। রেল অবরোধ করেছেন। এই নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করে গত সোমবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) ছেড়েছে আসামের রাজনৈতিক দল অসম গণপরিষদ (অগপ)। আসামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবি, এই বিল পাসের ফলে বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এই পার্শ্ববর্তী আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় পাবে। ১৯৭১ সালের মার্চের পরে ভারতে এলেও তাঁরা নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, এই বিলের প্রভাব আসামের নাগরিকপঞ্জিতে পড়বে না।২০১৪ সালে সবশেষ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসা সংখ্যালঘু অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবেন। মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে মোদি সরকার।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...
© All rights Reserved © 2020
Developed By Engineerbd.net
Engineerbd-Jowfhowo
Translate »